গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– কনকাপৈত ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের এছাক মিয়াজী ও মো. রুবেল।
ঘটনার পরদিন শনিবার ওই যুবককে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। নির্যাতনের শিকার ইমরান হোসেন (২১) ওই গ্রামের মো. শাহ আলমের ছেলে। তিনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এলাকাবাসী জানান, এলাকায় মাইক বাজানো নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে ইমরানকে একা পেয়ে মারধর করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। হামলাকারীরা তার কাছ থাকা ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল নিয়ে গেছে।
থানায় করা অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ইমরান পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। শুক্রবার রাতে তারাশাইল বাজারে বিকাশ দোকান থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। পথে শহিদুর রেজা রতন মিয়াজীর নেতৃত্বে একদল লোক অস্ত্রের মুখে ইমরানকে জিম্মি করে মারধর শুরু করেন। ছেলের আত্মচিৎকারে মা আফরোজা বেগম এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা তাকে ধমক দিয়ে সরিয়ে রাখে। পরে ইমরানকে মসজিদের সামনে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মায়ের সামনে মারধর করা হয়। হামলাকারীদের হাতে অস্ত্র থাকায় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে যাওয়ার সাহস দেখায়নি। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই নির্যাতন চলে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ইমরান অচেতন হয়ে পড়লে তাকে মৃত ভেবে চলে যায় তারা।
পরে আত্মীয়-স্বজনরা ইমরানকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জাবেদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, রাত ১২টা ২০ মিনিটে মুমূর্ষু অবস্থায় ইমরানকে হাসপাতালে আনা হয়। তার পুরো শরীরে আঘাতের চিহৃ রয়েছে।
অবস্থা গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
শনিবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইমরানকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে হামলাকারীরা গা ঢাকা দেয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ইমরানের মা আফরোজা বেগম বলেন, শহিদুর রেজার নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে আমার ছেলে প্রতিবাদ করতো। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইমরানকে হুমকি দিয়ে আসছিল তারা। ঘটনার দিন ইমরানকে একা পেয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে তাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায় তারা।
ওসি মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় শহিদুর রেজাকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। রোববার দুপুরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।