টেকনাফে সংঘবদ্ধ একটি চক্র চোরাইভাবে সাগরপথে পাচারকালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১২জন রোহিঙ্গা নারী ও শিশু ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে। এই ঘটনায় ৪জন দালাল সদস্য আটক হলেও আরো ৭জনকে পলাতক আসামী করা হয়েছে।
জানা যায়, ৪ঠা নভেম্বর ভোররাত সোয়া ৩টার দিকে টেকনাফ মডেল থানার একটি আভিযানিক দল টেকনাফ সদর ইউপির লম্বরী পর্যটন বাজার হতে ৫শ গজ দূরে জনৈক ফয়সালে লিজকৃত জায়গা সুপারি বাগানের ভিতর সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্রের সদস্যরা জোর পূর্বক কিছু নারী ও শিশুদেরকে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে জমায়েত করার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে যায়।
ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় দক্ষিণ লম্বরীর মোঃ কাশেমের পুত্র নুরুল আমিন (২৫), কেফায়েত উল্লাহর পুত্র নুরুল আফসার (১৯), হ্নীলা জাদিমোড়ার আবু তাহেরের পুত্র মিনহাজ উদ্দিন (২০) এবং নোয়াখালী হাতিয়া থানার জাহাজ মারা গ্রামের রফিক সরকারের পুত্র মোঃ আল আমিন (২৪) কে আটক করা হয়। এরপর ঘটনাস্থল হতে ৩জন রোহিঙ্গা নারী, ৯জন রোহিঙ্গা শিশুসহ মোট ১২জন ভিকটিমকে উদ্ধার পূর্বক পুলিশ নিরাপদ হেফাজতে নেই। উদ্ধারকৃত ভিকটিমরা বাস্তুচ্যুত মায়ানমার রোহিঙ্গা নাগরিক এবং তারা উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে বসবাস করে আসছে।
উল্লেখিত ভিকটিমদের আর্থ-সামাজিক অনগ্রসরতা ও পরিবেশগত অসহায়ত্বকে পুঁজি করে উন্নত জীবন-যাপন, অধিক বেতনে চাকুরী ও অবিবাহিত নারীদেরকে বিবাহের মিথ্যা প্রলোভনে প্রতারণা পূর্বক ছল-চাতুরীর আশ্রয় নিয়া যৌন নিপীড়ন,প্রতারণামূলক বিবাহ ও জবরদস্তিমূলক শ্রমসেবা আদায়ের অভিপ্রায়ে ৩/৪দিন যাবৎ ধাপে ধাপে আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে বর্ণিত ভিকটিমদের ঘটনাস্থলে এনে চোরাইভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের জন্য জোরপূর্বক আটক রাখে।
এই বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, ধৃত আসামী এবং পলাতক এবং লেঙ্গুরবিলের হাজী আমির আহমদের পুত্র ফয়সাল (২৫), জনৈক আজিমুল্লাহ (২৭), জনৈক ইসমাইল (২৬), মোঃ আইয়ুবের স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার (৩৮), ছেলে মোঃ ইউনুছ (২১) ও মোঃ রফিক (১৯) এবং দক্ষিণ লম্বরীর হাফেজ আহমদের পুত্র সাইফুল্লাহ (৪০) সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪জন পলাতক আসামীদের সংঘবদ্ধ মানব-পাচার চক্রটি দীর্ঘদিন যাবত পরস্পর যোগসাজশে বাঙ্গালি ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরাণার্থীদের নিয়ে মানব পাচারের অপরাধ সংঘটিত করে আসছে। এই ঘটনার বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা সম্পন্ন করে ধৃত আসামীদেরকে আদালতে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।