নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের ২ নম্বর সেক্টরের লেক থেকে সুজানা আক্তার (১৭) নামে এক কিশোরীর লাশ উদ্ধারের পর সেখান থেকে সাইনুর রশিদ ওরফে কাব্য (১৬) নামে আরেক কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত সাইনুর কাফরুল থানার কচুক্ষেত বউবাজার এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে। সে রাজধানীর আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। সুজানা ও সাইনুর বন্ধু ছিল।
আজ বুধবার সকালে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সহায়তায় পুলিশ সাইনুরের লাশটি উদ্ধার করে। লাশের সঙ্গে সাইনুরের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল পানি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সুজানার লাশ উদ্ধারের সময় একটি হেলমেট ও ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছিল। বাইকটি সাইনুরের বলে শনাক্ত করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
আজ দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার তাঁর কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে যে মোটরসাইকেলের ওভারস্পিডের কারণে দুর্ঘটনায় ওই কিশোর-কিশোরী নিহত হয়েছে। তবে আমরা সব কটি বিষয় মাথায় রেখেই তদন্ত চালাচ্ছি। আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে সুজানা ও সাইনুরের ময়নাতদন্ত হবে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’
নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মেহেদী ইসলাম বলেন, গতকাল সকালে পূর্বাচল ২ নম্বর সেক্টরে কাঞ্চন-কুড়িল বিশ্বরোড সড়কের বউরাটেক এলাকার লেক থেকে পুলিশ সুজানা আক্তার নামে এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে। তার স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, সুজানার সঙ্গে সাইনুর নিখোঁজ রয়েছে। আজ সকালে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের সহায়তায় পুলিশ লেকের পানির নিচ থেকে মোটরসাইকেলসহ সাইনুরের লাশ উদ্ধার করে। লাশটি সাইনুরের বলে শনাক্ত করেন তার পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।
এদিকে সুজানার মরদেহ নিতে আজ সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে আছেন সুজানার মা চম্পা বেগম, ভাই মেহেদী হাসানসহ স্বজনেরা। বেলা তিনটা পর্যন্ত ময়নাতদন্ত না হওয়ায় তাঁরা হাসপাতালেই অপেক্ষা করছিলেন। মেয়ের মৃত্যুশোকে কাতর চম্পা বেগম বলেন, মেয়ের বাইকে চড়ার শখ ছিল। প্রায়ই বন্ধুদের সঙ্গে বাইকে করে ঘুরতে বের হতো। গত সোমবার বিকেলে টিউশনির জন্য মেয়ে ঘর থেকে বের হয়। মেয়েকে বাসা থেকে রাস্তায় কিছু পথ এগিয়েও দিয়ে আসেন মা। এরপর আর বাসায় ফেরেনি মেয়ে। রাত নয়টার দিকে মুঠোফোনে কল করলে সেটি বন্ধ পান মা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে চম্পা বেগম বলেন, ‘সারা রাত মেয়ের জন্য টেনশন করছি। নানান জায়গায় খোঁজখবর করেও কোনো কিছু পাইনি। পরে থানায় যোগাযোগ করলে ওর মৃত্যুর খবর পাই। আমার মেয়ের এমন মৃত্যু হইব, ভাবতেও পারি নাই।