ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী বার্তা নিয়ে রাজশাহী কলেজ সেজেছে বর্ণিল রঙে। বসন্তের রঙিন আবহকে ধারণ করতে কলেজের বিভিন্ন স্থান আলপনার আঁচড়ে হয়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় রজনীকান্ত সেন মঞ্চের সামনে শুরু হয় আলপনা আঁকার এই কার্যক্রম। রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন বিভাগের ২৫ জন শিক্ষার্থী এতে অংশ নিয়েছেন। আগামী দুই দিন ধরে তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বসন্তের রঙ ছড়িয়ে দেবেন।
এই আয়োজনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অগ্নীবীণা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ফাহমিদা আক্তার রেখা, আর মূল কার্যক্রমের দায়িত্বে রয়েছেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোছা. রাবেয়া খাতুন। তাদের সঙ্গে রয়েছেন শিক্ষক উপদেষ্টা সহযোগী অধ্যাপক মো. ইকবাল হোসেন, যিনি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজ ক্যাম্পাসজুড়ে লাল, নীল, সবুজ, হলুদসহ নানা রঙের তুলিতে আঁকা হচ্ছে বাহারি আলপনা। রবীন্দ্র-নজরুল চত্বর, স্বাধীনতা চত্বর, হাজী মোহাম্মদ মহসিন ভবনের সামনের রাস্তা থেকে প্রশাসনিক ভবনের প্রবেশপথসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতি ও লোকশিল্পের নান্দনিক নিদর্শন।
অগ্নীবীণা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোছা. রাবেয়া খাতুন বলেন, “প্রতিবছর অগ্নীবীণার সদস্যরা বসন্তকে বরণ করতে এই আয়োজন করে। সারা বছর আমরা এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি। রাজশাহী কলেজের ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যকে আরও ফুটিয়ে তুলতে আমরা নিজেদের সর্বোচ্চটা দিতে চাই।”
অগ্নীবীণা পরিষদের উপদেষ্টা ও বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, “এটা তাদের বার্ষিক কার্যক্রম। তারা প্রতিবছর এভাবেই কাজ করে যেতে চায়। যদি কোনো অর্থায়ন বা ফান্ড পাওয়া যায়, তাহলে এই পরিষদ আরও ভালোভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।”
এ বছর কলেজের দেয়াল ও বিভিন্ন স্থান বর্ণিল চিত্রকর্মে সেজেছে। কোথাও গ্রামবাংলার বসন্ত উৎসবের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, আবার কোথাও বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তিদের প্রতিচ্ছবি আঁকা হয়েছে। পলাশ, শিমুল আর কৃষ্ণচূড়ার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে তৈরি হয়েছে দৃষ্টিনন্দন আলপনা।
শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগ কলেজের পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস নিয়ে এই সৌন্দর্য উপভোগ করছেন, কেউ ছবি তুলে স্মৃতি সংরক্ষণ করছেন, কেউবা বসন্তের এই উৎসব নিয়ে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করছেন।