সোমবার   ডিসেম্বর ২৩ ২০২৪   ৮  পৌষ  ১৪৩১


ওসি প্রদীপের সাক্ষাতের অপেক্ষায় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট

Admin user

Updated 20-Aug-27 / জাতীয় /   |   Admin   Read : 248

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার তদন্ত প্রায় শেষপর্যায়ে চলে এসেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গত ২৩ আগস্ট রিপোর্ট প্রদানের কথা থাকলেও ওসি প্রদীপের সাক্ষাতকার না পাওয়ায় সময় বৃদ্ধি করা হয়।

পরে এক সপ্তাহ বাড়িয়ে রিপোর্ট পেশ করার সময় নির্ধারণ করা হয় আগামী ৩১ আগস্ট। এ সময়ের মধ্যেই বরখাস্ত ওসি প্রদীপের মুখোমুখি হচ্ছে তদন্ত কমিটি।

তদন্ত কমিটির নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় আছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি।

ওসি প্রদীপ বর্তমানে মামলা তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাবের হেফাজতে দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ডে রয়েছে। র‌্যাব-১৫ কক্সবাজার কার্যালয়ে তাকে দ্বিতীয় দফায় চার দিনের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। যে কারণে আগামী ২৯ আগস্ট জেলা কারাগারে ওসি প্রদীপের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। ৩১ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা বেঁধে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিনহা হত্যার ঘটনা তদন্তের জন্য বিভিন্ন শ্রেণিতে ৬৮ জনের নাম তালিকাভুক্ত করেছে কমিটি। এরই মধ্যে কমিটি ৬৭ জনের সাক্ষাৎকার ইতোমধ্যে শেষ করেছে। বাকি রয়েছে শুধু ওসি প্রদীপ কিন্তু তারও সাক্ষাতকার নেয়ার কথা ছিল ১৯ আগস্ট।

এই সাক্ষাতকার নেয়ার পর ২৩ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করার কথা ছিল। কিন্তু ওসি প্রদীপকে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ৭ দিনের রিমান্ডের জন্য প্রদীপকে তার হেফাজতে নেয়ার কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। পরে আবেদন করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

এখন ওসি প্রদীপের দ্বিতীয় দফার চার দিনের রিমান্ড শেষ হবে ২৭ আগস্ট। এরপর তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হবে। যে কারণে ২৯ আগস্ট প্রদীপের সঙ্গে সাক্ষাতকারের সময় নির্ধারণ করেছে তদন্ত কমিটি।

তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তদন্তের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কেবল একজন আসামি ওসি প্রদীপের সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় আছি। আগামী ২৯ তারিখ জেলা কারাগারে ওই কথা বলাটা শেষ করতে চাই। এর পরের দুই দিনের মধ্যে (৩০ ও ৩১ আগস্ট) যেকোনো এক দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারব বলে আশা করছি।

এদিকে সিনহা হত্যা মামলার আরও তিন আসামিকে মঙ্গলবার দুপুরে চার দিনের রিমান্ডে নিয়েছে র‌্যাব।

তারা হলেন- টেকনাফের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ। এই তিন আসামি ৩১ জুলাই টেকনাফ থানায় পুলিশের করা সিনহা হত্যা মামলার সাক্ষী ছিলেন। সম্প্রতি সাত দিনের রিমান্ড শেষে এই তিন আসামি জেলা কারাগারে ছিলেন।

জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক (জেল সুপার) মো. মোকাম্মেল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, মঙ্গলবার সকালে তিন আসামি নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছকে কারাগার থেকে আদালতে নেয়া হয়।

এই তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‌্যাবের সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম আদালতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।

দুপুর ১২টার দিকে আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ তিন আসামিকে সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা।

এ সময় পুলিশ সিনহার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে আটক করে। পরে নীলিমা রিসোর্ট থেকে শিপ্রা দেবনাথকে আটক করা হয়। দুজনই এখন জামিনে মুক্ত।