কিশোরগঞ্জে এক রাজমিস্ত্রির ঔরসে জন্ম নিয়েছিল জোড়া মাথার কন্যাশিশু। কিন্তু সিজার করার আধা ঘণ্টা পরই শিশুটি মারা গেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির মাথা দুটি হলেও শরীর একটি, হাত-পা দুটি করে। দুটি মুখের একটির ওপরের ঠোট কাটা ছিল।শুক্রবার রাত ১০টায় জেলা সদরের শোলাকিয়া এলাকার পপুলার মাল্টিকেয়ার হাসপাতাল নামে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে শিশুটির জন্ম হয়েছিল। অবস্থা জটিল হওয়ায় রাত সাড়ে ১০টায় শহরতলির শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সজিব ঘোষ পরীক্ষা করে শিশুটিকে মৃত পান বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন।
পপুলার হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জাহিদ ইসলাম জনি জানিয়েছেন, করিমগঞ্জের দেহুন্দা ইউনিয়নের ভাটিয়া মোড়লপাড়ার রাজমিস্ত্রি অলিউল্লাহর স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার ৩৮ সপ্তাহের গর্ভবতী অবস্থায় এখানে ভর্তি হন শুক্রবার রাত ৯টার দিকে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর রাত ১০টায় সিজার করেন ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনি বিশেষজ্ঞ মোবাররা জাকারিয়া চৈতী। ভর্তির আগেই রোগীর অবস্থা জটিল ছিল। শিশুটি জন্মের পর শ্বাস-প্রশ্বাসের জটিলতার কারণে কিছুক্ষণ অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়। কিছুটা স্বাভাবিক হলে পাঠানো হয় সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে নেওয়ার আগেই শিশুটি মারা যায়। এই দম্পতির আড়াই বছরের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। প্রথম সন্তানের জন্মও সিজারে হয়েছিল। শনিবার সকাল ১০টার দিকে গ্রামের গোরস্থানে শিশুটির দাফন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সৈয়দ নজরুল হাসপাতালের পরিচালক হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন, ডিম্বাণু-শুক্রাণুর জিনগত সমস্যার কারণে এ ধরনের শিশুর জন্ম হয়ে থাকে। তবে শিশুটি বেঁচে থাকলেও এখানে অস্ত্রোপচারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ঢাকায় পাঠানো হতো।তিনি জানান, প্রত্যেক প্রসূতির গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহের মধ্যে একটা ‘অ্যানোমেলি টেস্ট’ (অসঙ্গতি পরীক্ষা) করানো উচিত। এ ধরনের জটিল সমস্যা দেখা দিলে সচেতন অভিভাবকরা গর্ভপাত করিয়ে ফেলেন। কারণ, এ ধরনের শিশু বাঁচিয়ে রাখা যেমন কঠিন, আবার বাঁচলেও শিশু এবং পরিবারের সারাজীবন ভোগান্তি পোহাতে হয়। এর অস্ত্রোপচারও অত্যন্ত ব্যয়বহুল।