রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রথম বর্ষের (২০২৩-২৪ সেশন) শিক্ষার্থীদের কোরআন দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকাল ৮টায় রাজশাহী মহানগরীর বিনোদপুরে তাদের নিজস্ব ওয়েলফেয়ার বিল্ডিংয়ে এ নবীনবরণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি আব্দুল মোহাইমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. নিজাম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির কাজ করে ভালো ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়ে। তিনি আরও বলেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাধারণত দুই দিকে যেতে পারে প্রথমটি সরকারি চাকরি বা বিসিএস এবং অন্যটি রিসার্চ। অনেকেই মনে করে রিসার্চ করে একমাত্র উপায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া, কিন্তু তা নয়, তাদের দেশের বাইরেও ২-৩ গুন বেতনে চাকরির সুযোগ রয়েছে । তিনি আরও বলেন রিসার্চের জন্য নিয়োমিত পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন কো-কারিকুলাম অ্যাকটিভিটিতে যুক্ত হতে হবে যা বিভিন্ন জায়গায় কাজে লাগে।
এ সময় আইন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. এম আব্দুল হান্নান বলেন, শুধুমাত্র সমাজ পরিচালনা নয়, রাষ্ট্র পরিচালনার নেতৃত্ব অর্জনের জন্যও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা। এজন্য প্রথমবর্ষ থেকে জীবনের লক্ষ্য স্থির করে সেই অনুযায়ী আগাতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে দেশকে নেতৃত্ব দিতে হবে। তবে সিভিল সার্ভেন্ট মানেই ক্ষমতার অপব্যবহার নয়। সিভিল সার্ভেন্ট মানে সরকারের চাকর নয়, জনগণের চাকর। জীবনে উন্নয়নে ভালো সঙ্গের জন্য ভালো বড়ভাইদের সাহায্য নিতে হবে স্যারদের সাহায্য নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো খারাপ বুঝে সঙ্গ বিচার করতে হবে।
এমাজউদ্দীন মন্ডল বলেন, মৃত্যু না থাকলে পৃথিবীতে কেউ ভালো কাজ করতো না, যেহেতু মৃত্যু আছে তাই আমাদের ভালো কাজ করতে হবে। ভালো কাজ করতে হলে ভালো সঙ্গ প্রয়োজন। মানুষের ভিতরে দুটি সত্তা থাকে, একটি নৈতিক সত্তা ও অপরটি পাশবিক সত্তা। মানুষ নৈতিক সত্তা দিয়ে ভালো কাজ করে। অপরদিকে পাশবিক সত্তা মানুষকে খারাপ দিকে নিয়ে যায়। দুনিয়ার জীবনে পাশবিক সত্তাকে দমিয়ে রাখতে হবে। এবং নৈতিক সত্তাকে খোরাক জোগাতে হবে। নৈতিক সত্তাকে খোরাক জোগাতে প্রতিদিন কোরআন পরতে হবে। ৫ ওয়াক্ত নামাজ পরতে হবে, রাতে আল্লাহর কাছে চাইতে হবে।
অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন বলেন, ১৫ বছর পর এমন অনুষ্ঠানে আসতে পেরে আনন্দিত। বিগত বছরগুলোতে ক্ষমতাধরেরা এমন অনুষ্ঠান করতেই দেয়নি। জীবনের সফলতা পাওয়ার মূল পথ হলো নিজেকে নিয়মানুবর্তিতার মধ্যে চলা। নিয়মানুবর্তিতা আসে আল্লাহর পথে চলার মাধ্যমে। কোরআনই একমাত্র পথ যা মানুষকে উন্নয়ন করতে পারে। আর এই উপকরণ, এই পথ তোমাকে দেখাবে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। শুধু দেশ নয় বরং দেশের বাইরেও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে ছাত্রদের মাঝে কুরআন শরীফ বিতরণ ও ইসলামী সংগীত পরিবেশন করা হয়।
এসময় বিভিন্ন বিভাগের এক হাজার দুইশত নবীন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।