চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশে (সিএমপি) নিম্ন পদের কর্মকর্তারাই শুধু নন, উর্ধতন অনেক কর্মকর্তাও বছরের পর বছর ধরে একই জায়গায় চাকরি করে যাচ্ছেন ঘুরেফিরে। গণঅভ্যূত্থানে ক্ষমতাচ্যূত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে উর্ধতন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা দলীয় আনুগত্য দেখিয়ে একই জায়গায় দীর্ঘ সময় ধরে চাকরি করে গেছেন। এরা কখনোই বদলি হন না। তাদের মধ্যে এমন কর্মকর্তাও আছেন, যারা পাঁচ থেকে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঘুরেফিরে সিএমপিতে রয়ে গেছেন। ফলে প্রশাসনের চেইন অফ কমান্ডও হয়ে পড়েছে নাজুক।
পুলিশ প্রবিধান অনুযায়ী, কোনো পুলিশ সদস্য তিন বছরের বেশি একই কর্মস্থলে থাকতে পারবেন না। তবে বিশেষ প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষ ইচ্ছা করলে এই মেয়াদ কিছুদিন বাড়াতে পারে। তবে দিনের ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা না থাকায় অনেক কর্মকর্তা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একই জায়গায় থেকে যাচ্ছেন বছরের পর বছর।
একই টানা আট বছর চার মাস ধরে শুধু উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হিসেবেই সিএমপিতে আছেন এসএম মোস্তাইন হোসেন। গত বছর তিনি অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে সিএমপিতে যোগ দেন মোস্তাইন হোসেন। ওই বছরের ১৮ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এবং ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-বন্দর)। পরে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ২৩ জুলাই পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ইএন্ডডি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০২৪ সালের ২৩ জুলাই থেকে তিনি উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) পদে কর্মরত রয়েছেন।
উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে মোস্তাইনের মতোই মোখলেছুর রহমানেরও টানা আট বছর চার মাস পার হতে চললো। গত বছর তিনিও অতিরিক্ত ডিআইজি হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে সিএমপিতে যোগ দেন মোখলেছুর রহমান। ওই বছরের ১৮ জুলাই থেকে ২০১৮ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সিএসবি), একই বছরের ৩১ আগস্ট থেকে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সরবরাহ ও পরিবহন) এবং ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২৩ মার্চ পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চলতি বছরের ২৪ মার্চ থেকে উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) পদে যাওয়ার পর আবার ৯ সেপ্টেম্বর থেকে উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
সিএমপিতে উপ-পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) হিসেবে তারেক আহমেদের দায়িত্বকাল ছয় বছর পাঁচ মাস হতে চললো। ২০১৮ সালের ২৬ জুন থেকে ২০১৯ সালের ২১ জুন পর্যন্ত তিনি উপ-পুলিশ কমিশনার (পিওএম) এবং ২০১৯ সালের ২১ জুন থেকে ২০২১ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-বন্দর) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর ২০২১ সালের ২ মার্চ থেকে টানা কর্মরত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-পশ্চিম) পদে। চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে উপ-পুলিশ কমিশনার (সরবরাহ) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন তিনি।