সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করে নতুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৪-এর প্রাথমিক খসড়া চূড়ান্ত করেছে। এই অধ্যাদেশে পূর্বের আইনের ৯টি বিতর্কিত ধারা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাকস্বাধীনতা ও সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষায় নতুন অধ্যাদেশে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।নতুন খসড়ায় সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এর বিতর্কিত ২০, ২১, ২৪, ২৫, ২৬, ২৯, ৩১, ৩২, এবং ৫৫ ধারা বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এই ধারাগুলো মূলত কম্পিউটার সোর্স কোড পরিবর্তন, মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় সংগীত বা পতাকা নিয়ে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা, মানহানি, এবং হ্যাকিংয়ের শাস্তি সংক্রান্ত।খসড়ায় বলা হয়েছে, নতুন অধ্যাদেশে এইসব অপরাধের ক্ষেত্রে অস্পষ্ট সংজ্ঞাগুলো বাদ দেওয়া হচ্ছে। ফলে ব্যক্তিগত মতপ্রকাশ বা সাধারণ বক্তব্যের জন্য আর মামলা করা যাবে না।অধ্যাদেশে নতুন করে ব্ল্যাকমেইলিং ও অশ্লীল কনটেন্ট প্রকাশের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। সরাসরি সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি, তার প্রতিনিধি, অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়া অন্য কেউ মামলা করতে পারবেন না।এছাড়া, সাইবার সুরক্ষা সংক্রান্ত বিভিন্ন ডাটা, ব্যক্তিগত ও আর্থিক তথ্য সুরক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কোনো ডিজিটাল তথ্য যদি দেশের নিরাপত্তা বা সামাজিক স্থিতিশীলতায় হুমকি সৃষ্টি করে, সেগুলো অপসারণ বা ব্লক করার ক্ষমতা সাইবার সুরক্ষা এজেন্সিকে দেওয়া হয়েছে।পরিপ্রেক্ষিত ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা২০১৮ সালে প্রণীত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং ২০২৩ সালের সাইবার নিরাপত্তা আইন ব্যাপক সমালোচিত হয়। নতুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে আগের আইনের অনেক দিক সংশোধন করা হয়েছে।সরকার জানিয়েছে, চলমান স্পিচ অফেন্স মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। তদন্তাধীন মামলাগুলোর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দ্রুত দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এই নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাকস্বাধীনতা ও ডিজিটাল সুরক্ষার ভারসাম্য বজায় রাখার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।