ইডেন কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ড. মমতাজ শাহানারের বাসায় ছাত্র সমন্বয়কের পরিচয়ে প্রবেশ করে একদল দুষ্কৃতকারী। ফ্ল্যাটে অবৈধ অস্ত্র ও টাকা মজুত আছে বলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কাছে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মমতাজের কাছে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তারা।
এরপর দুষ্কৃতকারীরা ৮৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ১৫ লাখ টাকা ক্যাশ লুট করে নেয়। এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করেছে উত্তরা-পশ্চিম থানা পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. মারুফ হাসান পল্লব (৩২) ও আব্দুল্লাহ আল মামুন সজিব (২৬)। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে লুট হওয়া ১৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ এক লাখ টাকা, একটি পাসপোর্ট ও এ ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাতে এসব তথ্য জানান ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি বলেন, গত ১৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে অজ্ঞাতনামা ৯/১০ জন দুষ্কৃতকারী উত্তরা-পশ্চিম থানার ১২ নম্বর সেক্টরের শাহ মখদুম এভিনিউ রোডের একটি বাসার ম্যানেজারকে জিম্মি করে বাসার ৬তলায় জনৈক ড. হারুনুর রশিদ হাওলাদারের ফ্ল্যাটে বিজিএমইএ ও শান্তা মারিয়াম ইউনিভার্সিটির ছাত্র এবং ছাত্র সমন্বয়কের পরিচয় দিয়ে ফ্ল্যাটের ভেতরে প্রবেশ করে।
দুষ্কৃতকারীরা ফ্ল্যাটের ভেতরে প্রবেশ করার পর ফ্ল্যাটে থাকা সিসি ক্যামেরার ডিভিআর খুলে ফেলে এবং উপস্থিত ড. হারুনুর রশিদ হাওলাদারের স্ত্রী ইডেন কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ড. মমতাজ শাহানারাকে বলে তাদের ফ্ল্যাটে অবৈধ অস্ত্র ও টাকা মজুত আছে।
তারা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কাছে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ড. মমতাজ শাহানারারের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে দুষ্কৃতকারীদের মধ্যে কয়েকজন তার সঙ্গে কথা বলতে থাকে এবং বাকিরা তার শোয়ার ঘর থেকে ৮৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ১৫ লাখ টাকা লুট করে নেয়।
ডিসি তালেবুর রহমান আরও বলেন, স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা লুট করে দুষ্কৃতকারীরা রাত ২টা ৪০ মিনিটের দিকে চলে যাওয়ার সময় সিসি ক্যামেরার ডিভিআরও সঙ্গে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গত ২০ অক্টোবর ড. মমতাজ শাহানারা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ৯/১০ জনের বিরুদ্ধে উত্তরা-পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, মামলা রুজু হওয়ার পর উত্তরা-পশ্চিম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে। এরপর তাদের গ্রেফতার ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে।
অভিযানকালে গত মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) ভোর রাতে উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের হোটেল প্যারাডাইজ থেকে জড়িত মো. মারুফ হাসান পল্লবকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত ১৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, একটি পাসপোর্ট ও ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
২৩ অক্টোবর গ্রেফতার মো. মারুফ হাসান পল্লবকে আদালতে পাঠালে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। অপর অভিযুক্তদের ব্যাপারে তথ্য দেন। এরপর মারুফ হাসান পল্লবের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুন সজিবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত এক লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।