চট্টগ্রামের পটিয়া বাইপাস সড়ক সন্ধ্যা নামলেই পরিণত হয় ভুতুড়ে নীরবতায়। ছিনতাইকারী, ইয়াবা ব্যবসায়ী ও ত্রিপল পার্টির দৌরাত্ম্যে স্থানীয়দের পাশাপাশি পথচারীরাও আতঙ্কে থাকেন। ৬ বছর আগে চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়কের যানজট এড়াতে শহরের পাশ ঘেঁষে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হলেও সন্ধ্যার পর সড়কটি কার্যত অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
স্থানীয়রা জানান, সূর্য ডোবার পর এই সড়কে সিএনজি, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল কিংবা সাধারণ মানুষের চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ভুল করে কেউ প্রবেশ করলে নিশ্চিতভাবেই ছিনতাইয়ের কবলে পড়তে হয়। আশপাশের বাসিন্দারাও আতঙ্কে সন্ধ্যার আগে ঘরে ঢুকে পড়েন।
চার বছর আগে দুর্বৃত্তরা সড়কের বৈদ্যুতিক লাইন কেটে দেয়। এখনো তা মেরামত করা হয়নি। ফলে অন্ধকারে সুযোগ বুঝে সক্রিয় হয় অপরাধীরা। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের শাহ আমানত সেতু এলাকা, মইজ্জ্যারটেক, কলেজ বাজার ও শান্তিরহাট থেকে যাত্রীবেশে সিএনজিতে উঠে ছিনতাইকারীরা, আর মোটরসাইকেল ও সিএনজিতে থাকা সহযোগীরা পুলিশের গতিবিধির ওপর নজর রাখে।
পটিয়ার শান্তিরহাট বোর্ড অফিস থেকে কক্সবাজারমুখী চক্রশালা বাইপাস সংযোগস্থল পর্যন্ত এলাকায় কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে সক্রিয় থাকে ছিনতাইকারীরা। শুধু পথচারী নয়, চলন্ত কাভার্ড ভ্যান ও ট্রাক থেকেও তালা কেটে মালামাল চুরি করে ‘ত্রিপল পার্টি’ নামে পরিচিত চক্র। এছাড়া এ সড়ক দিয়েই ইয়াবার চালান হাতবদল হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি পটিয়া হাসপাতাল গেট থেকে যাত্রীবেশে রিকশায় ওঠে দুই ছিনতাইকারী। তারা চালককে বাইপাস সড়কে নিয়ে গিয়ে জবাই করার চেষ্টা চালায়। চালকের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই রিকশাচালক বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
পটিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ নুরুজ্জামান স্বীকার করেছেন, বাইপাস সড়কে ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। তিনি জানান, কয়েকজন ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ (পটিয়া) জোনের ওসি জসীম উদ্দিন বলেন, জনবল সংকটের কারণে পর্যাপ্ত টহল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই পুলিশ প্রতিনিয়ত কাজ করছে।