আওয়ামী লীগের তিনবারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ মধ্যরাতে হামলার শিকার হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাঁকে সিলেট নগরের সাগরদিঘিরপার এলাকা থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে নিয়ে যান।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, হাসপাতাল সূত্রে পুলিশ হামলার বিষয়টি জানতে পেরেছে। পুলিশ বিষয়টি জানার আগেই মিসবাহ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে চলে যান। তবে কোথায় ও কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, তা বিস্তারিত জানতে অনুসন্ধান চলছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে মিসবাহ উদ্দিন আত্মগোপনে আছেন। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার অভিযোগে সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়। তাই পুলিশের চোখ এড়িয়ে রাতের বেলা তিনি মাঝেমধ্যে আত্মগোপনে থাকা বাসাটি থেকে বেরোতেন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মিসবাহ উদ্দিন একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকায় যাওয়ার পথে একদল দুর্বৃত্ত তাঁর পথ রোধে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় নগরের সাগরদিঘিরপার এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। ভোররাত চারটার দিকে তাঁকে নগরের সোবহানীঘাট এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মিসবাহ উদ্দিনের এক নিকটাত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে (মিসবাহ উদ্দিন) আঘাত করেছে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। রাতেই তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। পরে গতকাল শুক্রবার দুপুরের দিকে তাঁকে হাসপাতাল থেকে নিরাপদে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন তিনি শঙ্কামুক্ত।
হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে মিসবাহ উদ্দিন এখন কোথায় ও কী অবস্থায় আছেন, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না। এ ছাড়া কারা তাঁর ওপর হামলা করেছে, তা-ও জানা যায়নি। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তাঁর স্ত্রী, ভাই, মেয়ে ও ভাগনের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তাঁরা সাড়া দেননি।
যোগাযোগ করলে সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিভিন্ন সাংবাদিকদের সূত্রে হামলার বিষয়ে খবর পেয়েছেন তিনি। লিখিতভাবেও কেউ অভিযোগ করেননি। তবে পুলিশ ঘটনার আদ্যোপান্ত জানতে চেষ্টা করছে।
মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া সিলেট জেলা জজ কোর্টে তিনি সরকারি কৌঁসুলির দায়িত্বও পালন করেন।