শনিবার   অক্টোবর ২৫ ২০২৫   ১০  কার্তিক  ১৪৩২


নাগেশ্বরীতে নিখোঁজ শিশুর ম র দে হ প্রতিবেশীর টয়লেট থেকে উদ্ধার; আটক ৪

Faridul Islam Surjo

Updated 25-Sep-08 /   |   নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) উপজেলা প্রতিনিধি   Read : 83

নাগেশ্বরীতে প্রতিবেশীর বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে ৮ বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।গতকাল শনিবার রাতে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিল সে। পরিবারের অভিযোগ বলাৎকারের পর তাকে হত্যা করে লাশ গোপন করতেই সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে রেখেছে প্রতিবেশী যুবক। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত যুবক মমিনুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ছিট মালিয়ানি এলাকায়। নিহত শিশু মুরসালিন মিয়া (০৮) ওই এলাকার মশিউর রহমান মুছা ও মনজু দম্পতির ছোট ছেলে।

অভিযুক্ত মমিনুল ইসলাম (২২) পার্শ্ববর্তী ফরিদ উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মমিনুল ইসলামের মা মহসেনা বেগম ও বোন ফাহিমা খাতুনকে এবং মমিনুলের পরিবারকে প্রশ্রয় দিয়ে পালানোর সহযোগিতা করায় প্রতিবেশী নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মঞ্জু বেগমকে আটক করে থানায় নিয়েছে পুলিশ।

নিহত শিশু মুরসালিনের পরিবার অভিযোগ করে জানায়, ঘটনার দিন শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুরসালিনের বাড়িতে তার বড় ভাই মিমের বিয়ের আলোচনা চলছিলো। এ সময় মমিনুল ইসলাম মুরসালিনকে একাধিকবার ডেকে পাঠায়। পরে সে এক সময় নিজে ডেকে নিয়ে তার ঘরের ভেতরে দরজা বন্ধ করে মোবাইলে ভিডিও প্রলোভনে বলাৎকার করে মেরে ফেলেছে। তারা জানান শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মুরসালিনের মা ছেলেকে না পেয়ে খোঁজাখুজি শুরু করেন। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে মমিনুলের বাড়িতে গিয়ে মুরসালিনের কথা জিজ্ঞাসা করলে মমিনুল ও তার মা মহসেনা বেগম মুরসালিনকে দেখেনি বলে জানায়। কিছুক্ষণ পর আবারও গিয়ে জিজ্ঞাসা করলে তারা দরজায় তালা লাগিয়ে সটকে পড়ার চেষ্টা করে মমিনুলের নানা মহর উদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করে। এক সময় বিষয়টি জানাজানি হলে মমিনুলের মা মনজু বেগম ও নানী মেহরা বেগম প্রতিবেশি নজরুল ইসলাম ও আজির রহমানের বাড়িতে আত্ম গোপন করে।

গতকাল মুরসালিনকে না পেয়ে শুক্রবার এলাকায় মাইকিং করেন তার পরিবার। পরদিন শনিবার খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে রাত ৮টার দিকে মমিনুলের বাড়ির পেছনের সেপটিক ট্যাংকে পা দেখে বুঝতে পারেন। পরে ৯৯৯ এ ফোন করলে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে মরদেহ উদ্ধার করেন। এ সময় মমিনুলের মা, বাবা, বোন, নানা, নানি নজরুলের বাড়ি থেকে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি হলে মমিনুলের নিজ বাড়ি ও তার নানার বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

পরে পুলিশ মমিনুলের পরিবারের লোকজনকে প্রশ্রয় দেয়ায় নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী মনজু বেগম এবং মমিনুলের মা মহসেনা বেগম ও তার বোন ফাহিমা খাতুনকে (১৮) আটক করে থানায় নিয়ে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। তবে ততক্ষনে মমিনুলের বাড়ি ও নানার বাড়িতে আগুনে লাগালে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভালেও ততক্ষণে সবকিছু পুড়ে ভস্মিভ‚ত হয়ে যায়। এদিকে মুল অভিযুক্ত মমিনুল ইসলাম পলাতক থাকায় তাকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এছাড়াও মমিনুলের বাবা ফরিদ উদ্দিন, ভায়রা আব্দুল্লাহ, শ্যালক মাসুম মিয়াও পলাতক রয়েছে।

নাগেশ্বরী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।