হজরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
সবচেয়ে বড় কবীরা গুনাহ হলো: আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা, কোনো ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা কথা বলা বা মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। (বুখারি, হাদিস ৬৮৭১)
কোরআন কারিমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
আমি বনী ইসরাঈলের প্রতি বিধান দিয়েছিলাম যে, কেউ যদি হত্যা বা পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টির অপরাধ ছাড়া কাউকে হত্যা করে, তবে সে যেন পুরো মানবজাতিকে হত্যা করল। আর যে ব্যক্তি কারো প্রাণ রক্ষা করে, সে যেন গোটা মানবজাতির প্রাণ রক্ষা করল। (সুরা মায়িদা ৩২)
এ আয়াত থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, একজন মানুষের জীবন আল্লাহর কাছে কতটা মূল্যবান। একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা মানে মানবতার গোটা কাঠামোকে ধ্বংস করা।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
মুমিনকে হত্যা করা আল্লাহর নিকট গোটা পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার চেয়েও গুরুতর। (সুনানে নাসায়ি, হাদিস ৩৯৮৮)
হজরত আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
আল্লাহ (চাইলে) সব গুনাহ ক্ষমা করবেন; কিন্তু মুশরিক অবস্থায় মৃত্যু হলে বা ঈমানদার কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আরেক ঈমানদারকে হত্যা করলে (তা ক্ষমা করবেন না)। (আবু দাউদ, হাদিস ৪২৭০)
খুন হওয়া ব্যক্তি কিয়ামতের দিন খুনীকে নিয়ে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে। নিহত ব্যক্তি বলবে, হে আমার প্রভু! এ ব্যক্তি আমাকে হত্যা করেছে। (জামে তিরমিজি হাদিস ৩০২৯)
এ হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, হত্যাকারী তওবার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হতে পারে। হত্যার পাপ এতই জঘন্য যে, এটি বান্দার হক সংক্রান্ত হওয়ায় আল্লাহ তা ক্ষমা করবেন না, যতক্ষণ না যথাযথভাবে হক আদায় করা হয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যায়ভাবে হত্যা একটি মহা অপরাধ, যা কেবল একজন ব্যক্তির জীবন নয়, গোটা মানবজাতির প্রতি অন্যায়। এই অপরাধের শাস্তি শুধু পার্থিব নয়, আখিরাতেও অত্যন্ত ভয়াবহ।
তাই একজন মুমিনের উচিত, আল্লাহর বিধান মেনে চলা এবং অন্যায় হত্যার মতো গুনাহ থেকে নিজেকে সর্বদা দূরে রাখা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এমন গুনাহ থেকে রক্ষা করুন এবং সঠিক পথে পরিচালিত করুন।